Thursday, October 30, 2014

মাকাল / মাকাল ফল / Trichosanthes tricuspidata

মাকাল
ইংরেজী নাম: Colocynth, Cucumber
বৈজ্ঞানিক নাম হচ্ছে-Trichosanthes tricuspidata
মাকাল  একটি লতা জাতীয় গাছ। এর কাচা ফল সবুজ কিন্তু পাকলে টকটকে লাল হয়, কিন্তু ভেতরে বিশ্রী দেখা যায়। এক সময় গ্রাম-বাংলায় প্রচুর দেখা গেলেও এখন খুবই কম চোখে পড়ে। এর ভেষজগুণও রয়েছে।



পরিচিতি: একটি বহুবর্ষজীবী মাকাল ফলের গাছ লতানো আকৃতির উদ্ভিদ। এই গাছ অন্য বড় বৃক্ষকে আশ্রয় করে বেড়ে ওঠে। লম্বায় প্রায় ৩০-৪০ ফুট পর্যন্ত হয়। গাছের পাতা তেখতে হাতের তালুর মত। প্রতিটি পাতায় ৩-৭টি কারে খাঁজ থকে। পাতাগুলো একান্তরভাবে সজ্জিত। প্রতিটি পর্ব থেকে একটি করে পাতা ও আকর্ষি বের হয়। এই আকর্ষির সাহায্যেই মাকাল গাছ অন্য গাছকে আকড়িয়ে ধরে। পাতার কক্ষে ফুল ফোটে। ফূল ছোট সাদা রঙের এবং একলিঙ্গ। ফল দেখতে অনেকটা ডিমের মত কিন্তু আকারে ডিম থেকে বড় হয়। কাঁচা অবস্থায় সবুজ তার পর হলুদ ও পাকলে গাঢ় লাল হয়। ফলে প্রচুর পরিমাণে বীজ থাকে। শাঁস ধূসর বর্ণের এবং স্বাদ খুব তিতা। বর্ষাকালে ফুল ও ফল হয়।


জন্মস্থান: এই গাছ প্রাকৃতিক ভাবে বন-জঙ্গলে ও পরিত্যাক্ত জায়গায় জন্মায়। এমনকি হিমলয়ের ৫০০০ ফুট উঁচু স্থানেও এই গাছ জন্মাতে পারে। বাংলাদেশের ঢাকা, ময়মনসিংহ এবং টাঙ্গাইল জেলার জঙ্গলে এই গাছ দেখা যায়।

ঔষধী ব্যবহার: বাইরের চাকচিক্য যতই থাকুক না কেন ভেতরটা অন্তঃসারশূন্য_ এমন অর্থ বোঝাতে ‘মাকাল ফল’ প্রবচনটি ব্যবহৃত হয়ে থাকে। বাস্তবে কিন্তু মাকালের বেশ কিছু ভেষজ গুণও রয়েছে। এই গাছের মূল এবং ফল ঔষধ হিসেবে ব্যবহার করা হয়। ব্রিটিশ ফার্মাকোপিয়াতে এই গাছের ফলের ব্যবহারের কথা উল্লাখ আছে। আধুনিক ঔষধ শিল্পে ফলের নির্যাস থেকে তৈরি ঔষধ ল্যাক্সেটিভ হিসেবে ব্যাপক ব্যবহৃত হয়। ভারতেও রয়েছে এই ফল ও মূলের ব্যাপক ব্যবহার।
১) পারগেটিভ বা নির্মলকারক হিসেবে
২) লিভার টক্সিডিটি কমায়।
৩) দেহে কোন কারণে পানি জমলে অর্থাৎ শোথ রোগে দেহ থেকে পানি দূর করতে মাকাল ফলের নির্যাস খুবই শক্তিশালী ঔষধ হিসেবে কাজ করে।
৪) বিনাইন প্রোস্টেটিক হাইপারপ্লাসিয়ায় প্রয়োগ করা হয়।
৫)  এই ফলের নির্যাস থেকে তৈরীকৃত ঔষধ মহিলাদের জরায়ুর বিভিন্ন সমসার ব্যবহার করা হয়, বিশেষ করে মহিলাদের ঋতু বদ্ধতার ক্ষেত্রে দারুণ কার্যকর।
৬) এই গাছের মূল বেটে পেস্ট করে স্তনে লাগালে স্তনের প্রদাহ কমে।
৭)মূল সমপরিমাণ ত্রিফলা (আমলকি, বহেরা ও হরীতকী একসঙ্গে ত্রিফলা নামে পরিচিত) ও হলুদ মিশিয়ে যে অরিষ্ট তৈরি হয়, তা মধু মিশিয়ে সেবন করলে গনোরিয়া রোগে উপকার পাওয়া যায়।
এছাড়া গাছের মূল জন্ডিস, পেটে পানি জমা, প্রস্রাবের সমস্যা, বাতব্যথা, কাশি, পেট বড় হয়ে যাওয়া এবং শিশুদের এ্যাজমা নিরাময়ে বিশেষ ভূমিকা পালন করে।
তথ্য ও ছবি: Botany.bd + Internet

No comments:

Post a Comment